বৃহস্পতিবার   ০১ মে ২০২৫ || ১৭ বৈশাখ ১৪৩২

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১১:৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

রাজস্ব ব্যবস্থাপনা

দাতা সংস্থার পরামর্শ অন্ধভাবে অনুসরণ নয়: টিআইবি

দাতা সংস্থার পরামর্শ অন্ধভাবে অনুসরণ নয়: টিআইবি
টিআইবির লোগো | সংগৃহীত

রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি, সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনা এবং নিরীক্ষা কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনতে বিশ্বব্যাংকের ঋণের টাকায় ডিজিটাইজেশন ও অটোমেশনের যে নতুন প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে তাতে শুধু সরকারি অর্থের অপচয় হবে বলে মনে করছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

গতকাল বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'আগের প্রকল্পগুলো যে উদ্দেশ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছে, তার বড় প্রমাণ হলো বিশ্বব্যাংকের ঋণনির্ভর এই হাজার কোটি টাকার নতুন প্রকল্প নেওয়ার উদ্যোগ। কারণ এখনো আয়কর রিটার্ন দাখিল বা ভ্যাট আদায় প্রক্রিয়া পুরোপুরি অনলাইনে আসেনি, কাগুজে পদ্ধতিই রাজস্ব আদায়ের প্রধান উপায়। এর ফলে হয়রানি ও দুর্নীতি কমেনি, চালান জালিয়াতি বা কর ফাঁকি নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি, অর্থ পাচারও ঠেকানো সম্ভব হয়নি।'

তিনি আরও বলেন, 'এক যুগে দেশের কর জিডিপির অনুপাত ৯.১ শতাংশ থেকে কমে ৮.৫ শতাংশে নেমে এসেছে। এমনকি এক যুগের গড় অনুপাত আরও কম, ৭.৪ শতাংশ, যা বাংলাদেশকে বিশ্বের সর্বনিম্ন কর জিডিপির অনুপাতের দেশগুলোর একটিতে পরিণত করেছে।’

টিআইবি বলেছে, ‘আয়কর ব্যবস্থাপনা-প্রক্রিয়ার সহজীকরণ ও পূর্ণাঙ্গ অটোমেশন, পরিসংখ্যান ব্যবস্থার উন্নয়ন, সরকারি ক্রয় ও বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা এবং নিরীক্ষা কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনয়নের উদ্দেশ্যে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় নেওয়া ‘স্ট্রেনদেনিং ইনস্টিটিউশনস ফর ট্রান্সপারেন্সি অ্যান্ড অ্যাকাউন্ট্যাবিলিটি’ (সিটা) নামের পাঁচ বছর মেয়াদি প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫ কোটি মার্কিন ডলার। এ প্রকল্পের একটি বড় অংশই ব্যয় হবে সরকারি আয় ও ব্যয় ব্যবস্থাপনার অটোমেশন কার্যক্রমে।’

প্রযুক্তি-নির্ভর এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নে রাজস্ব বিভাগের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, 'আয়কর আদায় ব্যবস্থাপনা অটোমেশন করার জন্য একসময় ঠিকাদার যে সফটওয়্যার দিয়েছিল, তা শেষ পর্যন্ত ব্যবহার করাই যায়নি। পরে দেশেই স্বল্প খরচে আরেকটি ই-রিটার্ন ফাইলিং ব্যবস্থা তৈরি করতে হয়েছিল। একইভাবে অন্য প্রকল্পে দাতা সংস্থার শর্ত মেনে ভেন্ডর লকড বা কমার্শিয়াল অফ-দ্য-সেলফ সফটওয়্যার কিনে ব্যবস্থাপনায় হিমশিম খাওয়ার উদাহরণও আছে।'

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘নতুন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে দাতা সংস্থার নির্দেশনার অন্ধ অনুসরণ না করে সহজ ব্যবহারযোগ্যতা ও টেকসই সক্ষমতার কথা বিবেচনা করে প্রযুক্তি বাছাই করতে হবে।’

 এক্ষেত্রে বিদ্যমান দেশীয় প্রযুক্তি জ্ঞান ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে এনবিআর নিজস্ব কারিগরি অবকাঠামো গড়ে তোলার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ